Header Ads

Header ADS

স্ট্রোকের এক সপ্তাহ আগেই শরীর যে ৭টি সংকেত দেয়: সময়মতো চিনলে বাঁচতে পারে আপনার জীবন

স্ট্রোকের এক সপ্তাহ আগেই শরীর যে ৭টি সংকেত দেয়: সময়মতো চিনলে বাঁচতে পারে আপনার জীবন


স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ, স্ট্রোক হলে কি করবেন, স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়






স্ট্রোক একটি অত্যন্ত গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। যা যেকোনো সময় অপ্রত্যাশিতভাবে আঘাত হানতে পারে। আর এর পরিণাম হতে পারে অত্যন্ত ভয়াবহ, এমনকি প্রাণঘাতী। অনেকেই ভাবেন স্ট্রোক হয়তো কোনো পূর্বলক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শরীর আগে থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দিতে শুরু করে। এই প্রাথমিক সতর্কতাগুলো স্ট্রোকের পূর্বাভাস হিসেবে কাজ করে।




যদি স্ট্রোকের এই লক্ষণগুলো সময়মতো শনাক্ত করা যায়, তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বড় বিপদ, এমনকি জীবনহানি বা দীর্ঘস্থায়ী প্যারালাইসিস এর মতো জটিলতা এড়ানো সম্ভব। তাই প্রত্যেকেরই এই জরুরি স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কে অবগত থাকা উচিত।


আসুন জেনে নিই, স্ট্রোকের আগেই শরীর আমাদের ঠিক কী কী ৭টি সংকেত দিয়ে সতর্ক করে।




চলুন জেনে নেই, স্ট্রোকের আগে শরীর যে ৭টি জরুরি অ্যালার্মিং সিগন্যাল দিয়ে থাকে—


১. চেহারায় পরিবর্তন বা মুখ বেঁকে যাওয়া: স্ট্রোকের একটি অত্যন্ত পরিচিত ও সহজে শনাক্তযোগ্য লক্ষণ হলো হঠাৎ করে মুখের এক পাশ ঝুলে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়া। হাসতে গেলে বা কথা বলার সময় মুখের একদিক স্বাভাবিক না থাকলে এটি স্ট্রোকের প্রাথমিক সতর্কতা হতে পারে। অনেকে এটিকে গুরুত্ব দেয় না বা সিরিয়াস হিসেবে নেয় না। যা কিনা খুবই মারাত্মক।




২. হাত বা পা অবশ লাগা বা দুর্বল হয়ে পড়া: শরীরের যেকোনো এক পাশ, বিশেষ করে একটি হাত বা একটি পা হঠাৎ করে দুর্বল, ভারী বা সম্পূর্ণ অবশ হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় মনে হয় যেনো হাতে বা পায়ে হঠাৎ করে শক্তি বা জোর নেই অথবা ঝিঁঝিঁ ধরেছে যা সহজে দূর হচ্ছে না।




৩. কথা বলতে বা বুঝতে সমস্যা হওয়া: হঠাৎ করে কথা জড়িয়ে আসা, অস্পষ্টভাবে কথা বলা, সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া অথবা অন্য কেউ কী বলছে তা বুঝতে অসুবিধা হওয়া স্ট্রোকের আরেকটি পূর্বাভাস। মস্তিষ্কের যে অংশ ভাষা ও যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে মস্তিস্কের সমস্যা হলেই এমনটি হয়।




৪. দৃষ্টিশক্তির আকস্মিক পরিবর্তন: এক চোখে বা উভয় চোখে হঠাৎ করে ঝাপসা দেখা, সবকিছু দুটো দুটো দেখা (ডাবল ভিশন) বা সাময়িকভাবে দৃষ্টিশক্তি হারানোর মতো সমস্যা হতে পারে। এটিও স্ট্রোকের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।




৫. ভারসাম্য ও সমন্বয়ে সমস্যা: হঠাৎ করে চলাফেরায় অসুবিধা হওয়া, ভারসাম্য রাখতে না পারা, মাথা ঘোরা বা যেকোনো কাজ করতে গিয়ে হাত-পায়ের সমন্বয়ে সমস্যা হওয়া স্ট্রোকের আরো একটি সংকেত। মনে হতে পারে চারপাশ ঘুরছে বা শরীর একদিকে হেলে পড়ছে। তাই এই বিষয়টিকেও ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।




৬. হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা: কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই যদি আকস্মিক এবং অত্যন্ত তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয়। যা আগে কখনো অনুভব করেননি এবং যা ক্রমশ বাড়তে থাকে, তবে এটিও স্ট্রোকের একটি মারাত্মক লক্ষণ। কখনো কখনো এর সাথে বমিভাব বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতাও থাকতে পারে।




৭. আকস্মিক বিভ্রান্তি বা মনোযোগের অভাব: হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই প্রচণ্ড বিভ্রান্ত বোধ করা, স্থান-কাল-পাত্র সম্পর্কে ধারণা গুলিয়ে ফেলা, সাধারণ জিনিস চিনতে বা মনে করতে অসুবিধা হওয়া অথবা মনোযোগ ধরে রাখতে না পারাও স্ট্রোকের একটি জরুরি সংকেত। ব্যক্তি স্বাভাবিক আচরণ না করে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। এগুলোও স্ট্রোকের লক্ষণ।




স্ট্রোকের এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে কী করবেন?


এই লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি বা একাধিক যদি আপনার বা আপনার পরিচিত কারো মধ্যে হঠাৎ দেখা যায়, তবে এক মুহূর্তও দেরি করা উচিত নয়। এটি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি। দ্রুততম সময়ে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যোগাযোগ করুন। স্ট্রোক হলে কি করবেন - এর প্রথম এবং প্রধান ধাপই হলো যত দ্রুত সম্ভব জরুরী চিকিৎসা নেওয়া।




মনে রাখবেন, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত মূল্যবান। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়, ততোই মঙ্গল। মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি বা প্যারালাইসিস এর ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায় এবং রোগীর সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।



এই স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কে অবগত থাকুন এবং নিজেকে ও প্রিয়জনদের সুরক্ষিত রাখুন। এই প্রাথমিক সতর্কতাগুলো সময়মতো চিনে রাখলে বাঁচতে পারে আপনার জীবন।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.