Header Ads

Header ADS

কোলন ক্যান্সার কি কারনে হয়–কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ

কোলন ক্যান্সারের কারণ ও তার প্রতিকার



কোলন ক্যান্সার কি, কোলন ক্যান্সারের কারণ, কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ, কোলন ক্যান্সারের প্রতিকার, কোলন ক্যান্সার হলে কি করবেন
কোলন ক্যান্সার



কোলন ক্যান্সার কি কারনে হয়–কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ সমূহ কি কি?



কোলন ক্যান্সার আপনার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে!



কোলন ক্যান্সার, যা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার নামেও পরিচিত। এটি বিশ্বব্যাপী একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশেও কোলন ক্যান্সারের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। যা সময়মতো সনাক্ত না হলে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।


কোলন ক্যান্সার কী?


কোলন ক্যান্সার হল বৃহদান্ত্র বা রেকটামে অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি কোনো লক্ষণ না দেখালেও, সময়ের সাথে সাথে এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে।


কোলন ক্যান্সারের কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর:


১. বয়স ও জেনেটিক কারণ:

বয়স বাড়ার সাথে সাথে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ৫০ বছরের পর এই ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৫ বছরের নিচের ব্যক্তিদের মধ্যেও এই ক্যান্সারের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া, পারিবারিক ইতিহাস এবং জেনেটিক মিউটেশন, যেমন–Lynch syndrome বা Familial Adenomatous Polyposis (FAP) কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন:

লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংসের অতিরিক্ত সেবন, কম ফাইবারযুক্ত খাদ্য, ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, স্থূলতা এবং শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা অস্বাভাবিক হারে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৩. অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা:

টাইপ ২ ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদী ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ (যেমন ক্রোনস ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস) এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।


কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ:


প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার কোনো লক্ষণ নাও দেখাতে পারে। তবে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরী:

মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন (ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য)

★মলে রক্ত বা কালো রঙের মল

★অবিরাম পেট ব্যথা বা অস্বস্তি

★অকারণে ওজন হ্রাস

★দুর্বলতা বা ক্লান্তি

★আয়রন ঘাটতির কারণে অ্যানিমিয়া 


এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 


কোলন ক্যান্সার সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা:


সনাক্তকরণ:

কোলন ক্যান্সার সনাক্তকরণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়: 

✔ফেকাল ইমিউনোকেমিক্যাল টেস্ট (FIT)

✔কোলনোস্কোপি

✔সিটি স্ক্যান বা এমআরআই

✔বায়োপসি 


প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে রোগ নিরাময়ে খুবই সহায়ক হয়।

চিকিৎসা:


কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের পর্যায়, রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর। যেমন–

সার্জারি: ক্যান্সারযুক্ত অংশ অপসারণ।

কেমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ওষুধ ব্যবহার।

রেডিয়েশন থেরাপি: রেডিয়েশন দিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস।

টার্গেটেড থেরাপি: নির্দিষ্ট জিন বা প্রোটিন লক্ষ্য করে চিকিৎসা।

ইমিউনোথেরাপি: ইমিউন সিস্টেমকে ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে সক্রিয় করা। 


প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করলে সাফল্যের হার অনেক বেশি।


কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়:



সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: ফাইবারযুক্ত খাদ্য, ফলমূল ও সবজি গ্রহণ।

নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম।

ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার: ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকা।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: সুস্থ ওজন বজায় রাখা।

নিয়মিত স্ক্রিনিং: ৪৫ বছর বয়সের পর নিয়মিত কোলন ক্যান্সার স্ক্রিনিং করানো। 



কোলন ক্যান্সার একটি নীরব ঘাতক। যা প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত না হলে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তবে সচেতনতা, নিয়মিত স্ক্রিনিং এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। তাই আপনার এবং আপনার প্রিয়জনদের সুস্থতার জন্য কোলন ক্যান্সার সম্পর্কে আজই সচেতন হোন। 


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.