Header Ads

Header ADS

সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কি এবং সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের কাজ কি

সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কি এবং সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের কাজ কি?



সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কি, সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কাকে বলা হয়, Cerebral Hemesphere, স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক, মস্তিষ্কের গঠনপ্রণালী, স্নায়ুকোষ, অস্থিমজ্জা
সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার–Cerebral Hemisphere





সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কি, সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের কাজ কি?


মানব মস্তিষ্ক একটি জটিল ও বিস্ময়কর অঙ্গ। যা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, আচরণ এবং দৈনন্দিন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এই মস্তিষ্কের প্রধান দুটি অংশকে বলা হয় সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার। এই দুটি হেমিস্ফিয়ার একসাথে কাজ করে আমাদের জীবনের প্রতিটি দিক পরিচালনা করে। 




সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার কি?


সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার হলো মস্তিষ্কের দুটি প্রধান অর্ধাংশ। যা কর্পাস কলোসাম নামক একটি পুরু স্নায়ু তন্তুর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। এই দুটি হেমিস্ফিয়ার হলো: 

1. বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার: এটি সাধারণত ভাষা, বিশ্লেষণাত্মক চিন্তা, গণিত এবং যুক্তি নির্ভর কাজের জন্য দায়ী। 


2. ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার: এটি সৃজনশীলতা, কল্পনা, সংগীত, শিল্প এবং স্থানিক সচেতনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 



প্রতিটি সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার আবার চারটি লোব বা খণ্ডে বিভক্ত: 

ফ্রন্টাল লোব: চিন্তা, পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। 

প্যারিয়েটাল লোব: স্পর্শ, চাপ, তাপমাত্রা এবং ব্যথা অনুভবের জন্য দায়ী। 

অক্সিপিটাল লোব: দৃষ্টিশক্তি প্রক্রিয়াজাত করে। 

টেম্পোরাল লোব: শ্রবণ, ভাষা এবং স্মৃতি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে। 



সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের কাজ কি?


সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এর কাজগুলো নিম্নরূপ: 

১. চিন্তা ও বিশ্লেষণ:

বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার যুক্তি, বিশ্লেষণ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।  এটি আমাদের গণিত, ভাষা এবং যুক্তিনির্ভর কাজগুলো সম্পাদনে সহায়তা করে। 

২. সৃজনশীলতা ও কল্পনা:

ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার সৃজনশীল চিন্তা, কল্পনা এবং শিল্পকর্মের জন্য দায়ী।  এটি আমাদের সংগীত, চিত্রাঙ্কন এবং অন্যান্য সৃজনশীল কাজে সহায়তা করে। 

৩. ভাষা ও যোগাযোগ:

বাম হেমিস্ফিয়ারের ব্রোকা এবং ওয়ের্নিকি এরিয়া ভাষা উৎপাদন এবং বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।  এই অঞ্চলগুলো আমাদের কথা বলা, লেখা এবং পড়ার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। 

৪. স্মৃতি ও শেখা:

উভয় সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার আমাদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং শেখার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।  টেম্পোরাল লোব বিশেষভাবে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি সংরক্ষণে সহায়তা করে। 

৫. আচরণ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ:

ফ্রন্টাল লোব আমাদের আচরণ, আবেগ এবং সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে।  এটি আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। 




সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের গুরুত্ব:


সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার আমাদের জীবনের প্রতিটি দিক নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, আচরণ এবং শারীরিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করে। সঠিকভাবে কাজ না করলে বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন: স্ট্রোক, এপিলেপসি, পারকিনসনস ডিজিজ ইত্যাদি। 



সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের বিকাশ ও পরিবর্তন:


মানব জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের বিকাশ ঘটে। শিশু অবস্থায় মস্তিষ্কের বিকাশ দ্রুত হয় এবং এটি শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে কিছু কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। তবে নিয়মিত মানসিক চর্চা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। 



সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের সমস্যা ও প্রতিকার:


সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারে সমস্যা দেখা দিলে বিভিন্ন উপসর্গ প্রকাশ পায়। যেমন: স্মৃতিভ্রংশ, ভাষাগত সমস্যা, চলাফেরায় অসুবিধা ইত্যাদি। এ ধরনের সমস্যার প্রতিকার হিসেবে চিকিৎসা, থেরাপি এবং পুনর্বাসন প্রয়োজন হতে পারে। 




সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার মানব মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, আচরণ এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এর সঠিক কার্যকারিতা আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের যত্ন নেওয়া এবং সুস্থ রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.