Header Ads

Header ADS

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর হলে করণীয়: ঘরোয়া পদ্ধতি ও চিকিৎসার পূর্ণ গাইডলাইন


জ্বরের চিকিৎসা, জ্বর  হলে কি করবো, ডেঙ্গু জ্বর

জ্বর হলে করণীয় কি?


জ্বর হলো আমাদের দেহের একটি স্বাভাবিক ইমিউন প্রতিক্রিয়া। এটি শরীরে কোনো সংক্রমণ বা রোগের উপস্থিতি জানায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ ভাইরাসঘটিত জ্বর নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি হতে পারে গুরুতর অসুস্থতার পূর্বাভাস।


জ্বর হলে কি করবো? কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী?

নিচের এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যকঃ


  • তাপমাত্রা ১০৩°F (৩৯.৪°C) বা তার বেশি হলে
  • দুই-তিন দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর স্থায়ী হলে
  • ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া বা তীব্র মাথাব্যথা হলে
  • শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা অনুভব করলে
  • ত্বকে র‍্যাশ দেখা দিলে
  • বমি বা ডায়রিয়া লেগে থাকলে
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে
  • যদি রোগী বিভ্রান্ত হয়ে যায় বা অস্বাভাবিক আচরণ করে
  • শিশু (বিশেষ করে ৩ মাসের কম), বয়স্ক, বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম রোগীদের ক্ষেত্রে
  • জ্বর যদি কোনো জটিল রোগের ইঙ্গিত দেয়


এই সব ক্ষেত্রে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।


জ্বর হলে করণীয়: জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসার প্রাথমিক পদ্ধতি


জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে সঠিকভাবে শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত। নিচে উল্লেখ করা হলো জ্বরের সময় করণীয় কার্যকর পদক্ষেপগুলোঃ

১.পূর্ণ বিশ্রাম নিন

বিশ্রাম শরীরকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে। ঘুম ও বিশ্রামের ঘাটতি জ্বর দীর্ঘায়িত করতে পারে।

২.পর্যাপ্ত পানি ও তরল পান করুন

জ্বরের কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। পানি, ডাবের পানি, ওরস্যালাইন, ফলের রস এই সময় খুব উপকারী।

৩.প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করুন

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করলে তাপমাত্রা ও ব্যথা কমে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন।

৪.ঠান্ডা পানির পট্টি দিন বা স্পঞ্জিং করুন

ভেজা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে কপাল, বগল, ঘাড় ও হাত-পা মুছে দিলে শরীর ঠান্ডা হয়।

৫.হালকা পোশাক পরুন ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন

ভারী কাপড় পরলে শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। হালকা জামা ও খোলা জানালার ঘর সবচেয়ে উপযোগী।

৬.সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খান

জ্বরের সময় খিচুড়ি, স্যুপ, ফল, সেদ্ধ সবজি ইত্যাদি হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার।

৭.মূল রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করুন

জ্বর যদি ভাইরাসজনিত না হয়ে ব্যাকটেরিয়াজনিত হয়, তবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। সঠিক রোগ নির্ণয়ই প্রধান বিষয়।


জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়: প্রাকৃতিক কিছু কার্যকর কৌশল


আদা চা, তুলসী পাতা, নিমপাতা, মধু-লেবুর পানি এগুলো জ্বরের উপশমে কার্যকর হতে পারে। শরীরে পানি ঝরানোর জন্য হালকা গরম পানি দিয়ে গোসলও উপকারী হতে পারে। তাজা লেবুর রস বা তরমুজ শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।


মনে রাখবেন, ঘরোয়া উপায় শুধুমাত্র হালকা জ্বরের জন্য ব্যবহার্য। জ্বর গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


জ্বর নিয়ে সতর্কতা ও সচেতনতাঃ


  • দীর্ঘস্থায়ী জ্বরকে অবহেলা করলে তা আরো মারাত্মক হতে পারে
  • শিশুর জ্বরকে কখনো হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়
  • স্ব-চিকিৎসা নয়, প্রয়োজনমতো পরীক্ষাও জরুরী


শেষ কথা: জ্বর হলে কি করবো?


জ্বর হলে যত্ন নিন। সময়মতো চিকিৎসা গ্রহন করুন। জ্বর আমাদের শরীরের সতর্কবার্তা। এটি সবসময় ভয়ের কারণ নয়। তবে এর পিছনে লুকানো কারণ বুঝে নেওয়া এবং সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। জ্বর হলে করণীয় বিষয়গুলো যথাযথভাবে মেনে চললে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.